সমাজের Priority বদল: পড়াশোনা থেকে টাকা
আমরা যত বড় হতে থাকি তত আশেপাশের জিনিস গুলো পরিবর্তন হতে থাকে।
আমাদের সমাজে ভাল বলার অনেক মাপকাঠি থাকে। সময়ের সাথে সাথে সেই মাপকাঠির মধ্যে priority এর একটা তারতম্য চলে আসে।
এই যেমন ছোটবেলায় যখন ছিলাম তখন লেখাপড়া নিয়ে বেশ মাতামাতি ছিল। লেখাপড়া করে যে গাড়িঘোড়ায় চড়ে সে। সব সময় status এর তুলনা হত পড়াশোনায় কে কত ভাল সেটা নিয়ে। কারন মনে হয় তখন এত বেশি graduate এর supply ছিল না। বাবা মা ভাবত আমার ছেলেটা হয়ত এবার উচ্চশিক্ষিত হয়ে পরিবারের হালটা ধরবে। সব কষ্ট শেষ। সেই attitude টা বা সেই ধ্যান ধারনা এখনো থাকত যদি আসলেই মানুষ 'শুধু' পড়াশোনা করে ভাল মত চলতে পারত।
আমি যখন পোস্ট টা লিখছি তখন একজন ১ম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তার বেতন মোটামুটি ৩৭ হাজার টাকা (কমবেশি হলেও ২-৪ হাজার)। আর ঢাকা শহরে ৪ জনের পরিবার মধ্যবিত্ত ভাবে থাকতে কত লাগে জানেন?
বাসা ভাড়া কম করে ১০ হাজার। utility bill ৩ হাজার। সন্তানের স্কুল, বই, খাতা, যাতায়াত ৫ হাজার ধরলাম। তিন বেলা খেতে বাজার করতে হবে ১৫ হাজার ধরলাম। আপনার অফিসে যাতায়াত ধরলাম ৩ হাজার। বাকি টাকায় তাইলে গাড়ি-ঘোড়ায় চড়েন, বুড় বাপ মারে দেন যে এতদিন আপনাকে দিছে, মাঝে মাঝে রেস্তোরাঁতে যান, বিনোদনের জন্য tour দেন, চিকিৎসা করান, কি সামনে একটা নিজের স্থায়ি আবাসের জন্য বাড়ি বানাবেন না তাইলে জমান। পারবেন না। বলতে হবে ফকিন্নি হইয়া জন্মাইছি ফকিন্নি হইয়া মরমু।
এজন্য মনে হয় সমাজে status symbol হিসেবে পড়াশোনার priority কিছুটা কমে গেছে। priority বেড়েছে টাকার।
২ দিন আগের কথা। আমি আমার সময় সুযোগ অনুযায়ী ১/২ টা টিউশনি করাই। আমার পুরনো ছাত্র প্রিতমের বাবার সাথে দেখা হল। সে মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক। সে আমাকে বলল প্রিতমকে নাকি গন বিশ্ববিদ্যালয় তে ভর্তি করাইছে। প্রিতম veterinary তে পড়ে। পড়া শেষে চাকরি সে পাবেই কারণ প্রত্যেক উপজেলা তে নাকি ৩ জন veterinary doctor লাগে। চাকরি না পেলেও চেম্বার দেবে। টাকায় টাকা গুনবে।
সত্যি কথা প্রিতম কোথায় চান্স পায়ছে কি করতেছে, কি করবে কিছুই জানতে চাই নি আমি।
শুধু প্রিতমের আব্বু না। আমি অনেকের সাথে মিশেছি। তাদের সাথে কথা বলেছি। কিন্তু কেন যেন টাকার ব্যাপারটা বেশি highlight হয় (আগে হত না এমন না, কিন্তু priority list এ হয়ত ১ নম্বরে থাকত না)। মনে হয় এখন টাকার supply কম।
Back to Blog
